ঢাকা সোমবার, ০৬ অক্টোবর, ২০২৫, ২১ আশ্বিন ১৪৩২
96tvbd
কাগজে-কলমে উপস্থিতি শতভাগ

আলীকদমে শ্রেণিকক্ষ শিক্ষক শূন্য


৯৬ টিভি | স্টাফ রিপোর্টার সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫, ১১:১৪ এএম আলীকদমে শ্রেণিকক্ষ শিক্ষক শূন্য

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার দুর্গম এলাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কাগজে-কলমে শিক্ষকের কোনো ঘাটতি নেই, অথচ বাস্তবে ক্লাসরুম থাকছে শিক্ষক শূন্য। অন্তত পাঁচটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকের অনিয়মিত উপস্থিতি, কর্মস্থলে অনুপস্থিতি এবং অসত্য নথি দাখিলের মাধ্যমে বেতন উত্তোলনের অভিযোগ করেছেন স্থানীয় ১৪টি পাড়ার কারবারিরা (পাড়াপ্রধান)। এর ফলে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী ধারাবাহিক পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে স্থানীয় ১৪টি পাড়ার কারবারিরা মেনকেউ মেনক পাড়া, পাইয়া পাড়া, রাইতুমনি পাড়া ও ডর মেনরাই পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
স্কুলগুলোর সরকারি নথিতে চার থেকে পাঁচজন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে চিত্র ভিন্ন। স্থানীয় কারবারিরা অভিযোগ করেন, শিক্ষকরা অনুপস্থিত থাকায় শিশুরা পড়ালেখা থেকে আগ্রহ হারাচ্ছে এবং শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
কিছু শিক্ষকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে অসত্য নথি দাখিলের মাধ্যমে বেতন তোলার অভিযোগ আছে। এমনকি নিজে না এসে প্রক্সি শিক্ষক দিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনারও অভিযোগ উঠেছে, যা শিশুশিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করছে।
এ বিষয়ে মংপং ম্রো, মেনক ম্রো, রেংরই ম্রো, মাংক্রাত ম্রো, লক্ষ্মীমনি কারবারি ও ববিরত কারবারিরা বলেন, আমাদের সন্তানরা প্রতিদিন স্কুলে গেলেও শিক্ষকরা অনুপস্থিত থাকেন। এতে শিশুরা পড়াশোনা থেকে আগ্রহ হারাচ্ছে। দিনের পর দিন তারা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অভিযুক্ত শিক্ষকদের মধ্যে কমচঙ ইয়ুংছা মাওরুম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিকসন পাল বলেন, বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষক ও ৮৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। কখনো ২ জন, কখনো ৩ জন, আবার কখনো ৫ জন শিক্ষক উপস্থিত থেকে শ্রেণির পাঠদান করছেন।
অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, দুর্গম এলাকায় আগে প্রক্সি শিক্ষক দিয়ে পাঠদানের বিষয়টি সত্যি, তবে বর্তমানে এটা আর নেই।
আলীকদম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়া বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের ইতোমধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিনি ইউএনও মহোদয়সহ আলোচনা করে তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুর আলম বলেন, শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার কোনো সুযোগ নেই। তিনি এ বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষা অফিস থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Side banner