যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে খাগড়াছড়িতে প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করছেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। এ উপলক্ষে সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জেলা সদরের ধর্মপুর আর্যবন বিহার, গোলাবাড়ী আর্য অরণ্য ভাবনা কুঠির, য়ংড বৌদ্ধ বিহারসহ বিভিন্নস্থানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা ভিক্ষুদের নিকট পঞ্চশীল গ্রহণের পর বুদ্ধমূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিকার দান, বর্ষাবাসের চীবরদান, পিণ্ডদান ও স্বধর্ম শ্রবণসহ নানা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেন। এ সময় ফুলপূজা ও বুদ্ধপূজার আয়োজনও করা হয়।
অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করেন।
শহরের য়ংড বৌদ্ধ বিহারে আগত মংসি মারমা বলেন, বিশ্বের সকলের শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে আজ বুদ্ধের কাছে ফুল ও বিভিন্ন আহার দিয়ে প্রার্থনা করব। অশান্ত পৃথিবী যেন শান্ত থাকে—এই আমাদের কামনা।
ম্রাসাথোয়াই চৌধুরী বলেন, প্রবারণার অর্থ আত্মশুদ্ধি ও মৈত্রী। এই দিনে সকাল থেকে বুদ্ধপূজা, অষ্টপরিকার দান, সংঘদান, হাজার বাতি দান ও আকাশ প্রদীপ দানসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালিত হয়।
আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাসের বর্ষাবাস শেষে প্রতি বছর প্রবারণা পূর্ণিমা পালিত হয়। এ সময়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ধ্যান, সাধনা, সমাধি ও প্রজ্ঞা চর্চায় নিয়োজিত থাকেন এবং বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বিহার ত্যাগ করেন না।
দক্ষিণ খবংপুড়িয়া বিহারের অধ্যক্ষ নন্দ প্রিয় মহাস্থবির বলেন, তিন মাস বর্ষাবাস শেষে আজ থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা প্রয়োজনে বিহারের বাইরে যেতে পারবেন। বর্ষাবাসকালীন ভিক্ষুকেরা শীল, সমাধি ও প্রজ্ঞা চর্চায় নিবিষ্ট ছিলেন। প্রবারণা পূর্ণিমার মধ্য দিয়ে বর্ষাবাসের সমাপ্তি ঘটে।
প্রবারণা পূর্ণিমার পর থেকেই শুরু হয় মাসব্যাপী কঠিন চীবর দান উৎসব, যা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব হিসেবে পালিত হয়।
আপনার মতামত লিখুন :